ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২৩
জনাব কামাল বিদেশ যাওয়ার আগে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে একটি 'ফরেন-ডিপোজিট স্কিম' চালু করে গেছেন। বিদেশে চাকরি থেকে অর্জিত আয় কামাল সাহেব প্রতি মাসের শুরুতে সরাসরি ব্যাংকে পাঠিয়ে দেন। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক 'ফরেন-ডিপোজিট স্কিম'-এ জমাকৃত অর্থের ওপর মাসিক ১২% চক্রবৃদ্ধি সুদ প্রদান করে।
খ. নামিক সুদের হার এবং কার্যকরী সুদের মধ্যে দুটি মৌলিক পার্থক্য দেখাও।
গ. ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নামিক সুদের হার এবং কার্যকরী সুদের হার কত?
ঘ. জনাব কামাল যদি প্রতি মাসের শুরুতে চক্রবৃদ্ধির সুবিধা পান তাহলে তার কার্যকরী সুদের ওপর কী প্রভাব পড়বে? বিশ্লেষণ করো।
কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাকে যে সুদের হার লিখিতভাবে উল্লেখ করে, তাকে নামিক সুদের হার বলে।
নামিক সুদের হার ও কার্যকরী সুদের হারের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
-01-DATE-07-07-2024.webp?alt=media&token=f8e52a76-7840-418f-a17d-51957bbb5320)
উদ্দীপকের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নামিক সুদের হার ও কার্যকরী সুদের হার নির্ণয়:
দেওয়া আছে,
মাসিক ১২% হারে চক্রবৃদ্ধি সুদ প্রদান করে।
নামিক সুদের হার, i = ১২%
বছরে চক্রবৃদ্ধির সংখ্যা, m = ১২ বার [ মাসিক চক্রবৃদ্ধি]
আমরা জানি,
কার্যকরী সুদের হার,
= (১.১২৬৮ - ১) ১০০
= ০.১২৬৮ ১০০ = ১২.৬৮%
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নামিক সুদের হার ১২% এবং কার্যকরী সুদের হার ১২.৬৮%।
উত্তর: ১২% এবং ১২.৬৮%।
জনাব কামাল যদি প্রতি মাসের শুরুতে চক্রবৃদ্ধির সুবিধা পান তাহলে কার্যকরী সুদের পরিমাণ কমে যাবে। চক্রবৃদ্ধির সংখ্যার সাথে কার্যকরী সুদের ধনাত্মক সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ, চক্রবৃদ্ধির সংখ্যা যত বাড়বে কার্যকরী সুদের পরিমাণও তত বাড়বে। তবে কিস্তির সময়ের ভিন্নতার কারণেও কার্যকরী সুদের পরিমাণ ভিন্নতর হয়। উদ্দীপকে জনাব কামাল বিদেশ যাওয়ার আগে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে একটি "ফরেন-ডিপোজিট স্কিম চালু করে গেছেন। বিদেশের চাকরি থেকে অর্জিত আয় জনাব কামাল প্রতি মাসের শুরুতে সরাসরি ব্যাংকে পাঠিয়ে দেন। এক্ষেত্রে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক নামিক সুদের হারে মাসিক চক্রবৃদ্ধিতে বার্ষিক ১২% হারে সুদ প্রদান করে। যার কার্যকরী সুদের হার ১২.৬৮% [গ নং থেকে পাওয়া]। উদ্দীপকে জনাব কামালের জমাকৃত টাকার ওপর মাসের শুরুতে সুদের হিসাব করলে প্রথম মাসের সুদের হিসাবে শূন্য টাকা আসবে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে মোট প্রাপ্ত সুদের পরিমাণ কমে যাবে। ফলে কার্যকরী সুদের পরিমাণও কমে যাবে। তাই বলা যায়, প্রতি মাসের শুরুতে চক্রবৃদ্ধি সুবিধা পাওয়ার ফলে জনাব কামালের কার্যকরী সুদের পরিমাণ কমে যাবে।
ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২৩
যমুনা টেক্সটাইল লিমিটেড ২০২২ সালের জুন মাসে ৫ বছর মেয়াদি পরিশোধযোগ্য অগ্রাধিকার শেয়ার বিক্রয় করে ৫,০০,০০০ টাকা অতিরিক্ত মূলধন সংগ্রহ করেছিল। ২০২৭ সালের জুন মাসে অগ্রাধিকার শেয়ারের দায়মোচন করতে হবে। অর্থাৎ, ৫,০০,০০০ টাকা পরিশোধ করে দিতে হবে। দায় পরিশোধের বছর প্রতিষ্ঠানের ওপর যেন কোনো বাড়তি চাপ সৃষ্টি না হয় সেজন্য পরিচালকমণ্ডলী প্রতিপূরক তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রতি বছরের শেষে অর্জিত মুনাফা থেকে ৯০,০০০ টাকা এই তহবিলে প্রদান করা হবে এবং তহবিলটি মেঘনা ব্যাংকে ১২% চক্রবৃদ্ধি সুদে বিনিয়োগ করা হবে। এর ফলে ২০২৭ সালে ঋণ পরিশোধ করতে প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না।
খ. সাধারণ বৃত্তি ও অগ্রিম বৃত্তি বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
গ. ২০২৭ সালের জুন মাসে মেঘনা ব্যাংকে বিনিয়োজিত প্রতিপূরক তহবিল থেকে সুদ-আসলে মোট কত টাকা পাওয়া যাবে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. প্রতিপূরক তহবিল থেকে প্রাপ্ত সুদ-আসলের পরিমাণটি কি ঋণের সমপরিমাণ হবে? যদি না হয় তাহলে প্রতি কিস্তিতে কত টাকা জমা দিলে ৫,০০,০০০ টাকা ঋণ পরিশোধ করা যাবে? ব্যাখ্যা করো।
কোনো সম্পদকে মূলধনী সম্পদে পরিণত করার জন্য উদ্ভাবনী কাজ, পরিকল্পনা, অর্থ ব্যয়সংক্রান্ত কাজকে প্রকল্প বলে।
প্রতি বছরের বা মাসের শেষে সমপরিমাণ নগদ প্রবাহের ধারাকে সাধারণ বার্ষিক বৃত্তি ও বছরের বা মাসের শুরুতে নগদ প্রবাহের ধারাকে অগ্রিম বার্ষিক বৃত্তি বলে। সাধারণ বার্ষিক বৃত্তি ও অগ্রিম বার্ষিক বৃত্তি উভয় ক্ষেত্রে সমপরিমাণ নগদ অর্থের প্রবাহ ঘটে। তবে সাধারণ বার্ষিক বৃত্তি বছরের বা মাসের শেষে সংঘটিত হয়। অন্যদিকে, অগ্রিম বার্ষিক বৃত্তি বছরের বা মাসের শুরুতে সংঘটিত হয়।
২০২৭ সালের জুন মাসে মেঘনা ব্যাংকে বিনিয়োজিত পরিপূরক তহবিলের সুদ-আসল নির্ণয়:
দেওয়া আছে,
বার্ষিক কিস্তির পরিমাণ, A = ৯০,০০০ টাকা
সময়, n = ৫ বছর
সুদের হার, i = ১২% বা ০.১২
আমরা জানি,
বার্ষিক বৃত্তির ভবিষ্যৎ মূল্য,
= ৯০,০০০ ৬.৩৫২৮৫
= ৫,৭১,৭৫৬.৫০ টাকা
২০২৭ সালের জুন মাসে মেঘনা ব্যাংকে বিনিয়োজিত প্রতিপূরক তহবিল থেকে সুদ-আসলে মোট ৫,৭১,৭৫৬.৫০ টাকা পাওয়া যাবে।
উত্তর: ৫,৭১,৭৫৬.৫০ টাকা।
প্রতিপূরক তহবিল থেকে প্রাপ্ত সুদ-আসলের পরিমাণ হবে ৫,৭১,৭৫৬.৫০ টাকা। অপরদিকে, ঋণের পরিমাণ ৫,০০,০০০ টাকা। এখানে তহবিলের টাকা ঋণের টাকার থেকে বেশি। অর্থাৎ, প্রতিপূরক তহবিলের থেকে প্রাপ্ত সুদ-আসল এবং ঋণের পরিমাণ সমান হবে না। ঋণের অর্থের সমপরিমাণ করতে কিস্তির পরিমাণ নির্ণয়:
আমরা জানি,
বার্ষিক বৃত্তির ভবিষ্যৎ মূল্য,
৫,০০,০০০ = A ৬.৩৫২৮৫
প্রতি কিস্তিতে ৭৮,৭০৪.৮৩ টাকা জমা দিলে ৫,০০,০০০ টাকা ঋণ পরিশোধ করা যাবে।
উত্তর: ৭৮,৭০৪.৮৩ টাকা।